বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
খুলনা ব্যুরো::
সহপাঠিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও অন্ত:সত্ত্বা করার অভিযোগে খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি প্রোগ্রামের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিঞ্জন রায়কে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিঞ্জন খুলনার কর কমিশনার প্রশান্ত কুমার রায়ের ছেলে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়টির খুলনা শাখার উপাচার্য প্রফেসর ড. তারাপদ ভৌমিক বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এর আগে মঙ্গলবার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উপাচার্য প্রফেসর ড. তারাপদ ভৌমিক এ প্রতিবেদককে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিঞ্জনের ঘটনাটি শোনার পর নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিঞ্জনকে সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নওশের আলী মোড়লকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন গণ মাধ্যমে প্রকাশিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বরাতের ভিত্তিতে এল.এল.বি প্রোগ্রামের ছাত্র শিঞ্জন রায় দ্বারা একই বিভাগের ছাত্রী নাঈমা সুলতানা স্নিগ্ধা (২১) কে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ায় ঘটনাটিকে আমলে নিয়ে ১৯/০৮/২০১৯ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের অফিস কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধানগণ এবং প্রক্টরের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তদুপরি, ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী শিক্ষার্থীর মামলা সূত্রে জানা যায়, নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এলএলবিতে শিঞ্জন রায় ও ওই মেয়েটি একসঙ্গে পড়াশুনা করেন। এক বছর আগে শিঞ্জন রায় তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এরপর বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাড়া বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। তিনি বর্তমানে ৬মাসের অন্ত:স্বত্ত্বা। কিন্তু ১৪ আগস্ট পারিবারিকভাবে অন্য মেয়ের সঙ্গে শিঞ্জনের বিয়ে দেয়া হয়। এ খবর পেয়ে ওই ছাত্রী ১৫ আগস্ট রাত ১০টার দিকে নগরীর মুজগুন্নী আবাসিক এলাকার ১৬নম্বর রোডে গিয়ে শিঞ্জন রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তার বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে শিঞ্জন তাকে সেখান থেকে জোর করে ইজিবাইকে তুলতে গেলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। এ খবর পুলিশের কাছে পৌঁছালে তাদের দু’জনকেই সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় নিয়ে আসে। মেয়েটি ১৬ আগস্ট শিঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করে।
এছাড়া খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। এই মামলায় শিঞ্জন একদিনের রিমান্ড শেষে বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।